Business Idea In Bengali

সাধারণত প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রী স্কুল কলেজে যায় পড়াশোনার মাধ্যমে ডিগ্রি অর্জনের জন্য এবং পরবর্তীতে যাতে তারা কোনো না কোনো কাজে নিযুক্ত হয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। কিন্তু দেখা যায় বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরা কাজ না পেয়ে হতাশায় জীবন যাপন করছেন।

সেই সমস্ত ভাই বোনেদের বেকারত্ব জীবনকে সচ্ছল করতে এবং তাদেরকে নতুন দিশার আলো দেখাতে আজকে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করব, যে কিভাবে তারা স্বল্প বিনিয়োগে একটি নতুন ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে এই ব্যবসার উন্নতি ঘটিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন।

স্টেশনারি ব্যাবসা:

আজকে আমাদের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে মূলত স্টেশনারি ব্যবসার পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে। স্টেশনারি ব্যবসা হল এমন একটি ব্যবসা যেখানে মানুষের মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা নিত্যান্ত ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র সামগ্রী এর সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু স্টেশনারি ব্যবসা নিয়ে নয় যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগে প্রথমেই আপনাকে ভাবতে হবে যে আপনার প্রাথমিক গ্রাহক কারা হতে পারে এবং তাদেরকে আপনি কিভাবে আকৃষ্ট করবেন।

স্টেশনারি ব্যবসা পরিকল্পনা:

আজকে আমরা আলোচনা করব যে, কিভাবে একটি স্টেশনারি ব্যবসা শুরু করে ধীরে ধীরে আর্থিক লাভে অগ্রগতি লাভ করা যায়।

  • স্টেশনারি ব্যবসার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল জায়গা। স্টেশনারি স্টলটি এমন একটি জায়গায় হতে হবে যেখানে মানুষের আনাগোনা খুব বেশি। সাধারণত দেখতে গেলে স্কুল কিংবা কলেজের কাছাকাছি এই দোকানটি থাকলে ব্যবসায় উন্নতি করার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা বা লাভজনক হয়ে থাকে।
  • একটি ছোট ধরনের স্টেশনারি ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে ২০০ থেকে ৩০০ বর্গফুটের জায়গা নিতে হবে। আপনাকে প্রথমে এইভাবে শুরু করতে হবে এবং আপনি চাইলে বেশি পরিমাণ জায়গা নিয়ে ধীরে ধীরে ব্যাবসায় উন্নতি ঘটাতে পারেন।
  • আপনার যদি জায়গা অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে তাহলে পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের সামগ্ৰী ওই দোকানে প্রবেশ করানোর সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
  • কাস্টমার বা গ্রাহকদের মন আকর্ষণ করতে আপনাকে অতি অবশ্যই দোকানটাকে খুব সুন্দর ভাবে সাজাতে হবে এবং বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম খুব কম মূল্যে বিক্রি করতে হবে। এবং পরবর্তীতে আপনার দোকানে গ্রাহক বা কাস্টমারের চাহিদা বেড়ে গেলে আপনি ওই সমস্ত দ্রব্যাদির মূল্য সামান্য হলেও বাড়াতে পারবেন।
  • স্টেশনারি দোকানে যে সমস্ত দ্রব্যাদি থাকে সেই সমস্ত দ্রব্যাদি স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকাকালীন যদি বিক্রি নাও হয় তাহলে আপনি আপনার দোকানে বিভিন্ন ধরনের উপহার, খেলনা ইত্যাদি দ্রব্য রাখতে পারেন অবশ্যই তা অফ সিজিনে আপনাকে কিছু পরিমাণ অর্থ উপার্জনে সহায়তা করবে।
  • আপনি যদি প্রথমে ছোট একটি দোকান করে এই স্টেশনারি দ্রব্য বিক্রি করতে থাকেন তাহলে আপনাকে কোন কাজের লোক রাখতে হবে না আপনি নিজেই তা সরবরাহ করতে পারবেন। কিন্তু যদি দোকানটি আপনার বড় হয় তাহলে অতি অবশ্যই দোকানে এক থেকে দুইজন কর্মচারী রাখা দরকার। কেননা গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের দ্রব্যাদি কেনাকাটায় সুবিধা হবে।

স্টেশনারি ব্যাবসায় মুল্য বিনিয়োগ:

স্টেশনারি ব্যবসার ক্ষেত্রে মূল্য বিনিয়োগের একটি ধারণা দেওয়া যেতে পারে যে, আপনি প্রথমত ছোট দোকান করছেন নাকি মাঝারি ও বড় ধরনের দোকান করছেন? সেই অনুযায়ী আপনার টাকার পরিমান কমতেও পারে এবং বাড়তেও পারে। ধরুন আপনি একটি ছোট দোকান করলেন। তো সে ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসাটি শুরু করার জন্য কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতন আপনার খরচ হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি তা মাঝারি এবং বড় ধরনের করার চেষ্টা করেন তবে আপনাকে অতি অবশ্যই কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা মতন মুল্য বিনিয়োগ করতে হবে।

স্টেশনারি ব্যবসায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী:

আপনি হয়তো ভাবছেন যে স্টেশনারি ব্যবসা তো শুরু করব কিন্তু ওই দোকানে কি ধরনের সামগ্রিক রাখা যেতে পারে যার মাধ্যমে মানুষ আকর্ষিত হয়ে আমাদের দোকানে আসে এবং দ্রব্যাদি কেনাকাটা করে। নিম্নে কিছু স্টেশনারি দ্রব্যাদির নাম নথিভুক্ত করা হলো যেগুলি আপনার দোকানে রাখলে ভালোই অর্থ উপার্জন হবে। যথা –

স্টেশনের দ্রব্যের মধ্যে আপনি রাখতে পারেন কাগজ,কলম,রাবার ব্যান্ড, পেপার ক্লিপ,আঠালো,কাঁচি,মার্কার, পেন্সিল, রঙিন পেন্সিল,ক্যালকুলেটর,হ্যাঙ্গিং ফাইল এছাড়াও আরও অন্যান্য সামগ্ৰী যেমন – নোটপ্যাড,কাগজপত্র, শীট, কভার, টিস্যু পেপার, বাবল র‍্যাপ রোল, ডাকটিকিট ইত্যাদি।

উপসংহার:

সর্বশেষে একটাই কথা বলবো যে, আপনার দোকান টা যেমন সাজানো গোছানোর প্রয়োজন যার প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয়ে আপনার দোকানে প্রবেশ করবে ঠিক ততটাই ও প্রয়োজন গ্রাহকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার। আপনার ব্যবহারই মানুষকে মুগ্ধ করবে আপনার দোকানে আরো অন্যান্য গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে। কেননা ব্যবহারই হচ্ছে মানুষের আসল পরিচয়।

তো এই ছিল আজকের স্টেশনারি ব্যবসার পরিকল্পনার কয়েকটি তথ্য। অবশ্যই আপনারা হয়তো এটি পড়ে একটি স্টেশনারি ব্যবসার পরিকল্পনা কিভাবে করা যায় তা জানতে পারলেন। এবং আপনার যদি ইচ্ছা থাকে অবশ্যই আপনি ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। পোস্টটি পড়ে আপনাদের যদি ভালো লাগে তবে অবশ্যই তা আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন যাতে তারাও যদি এরকম কোন সমস্যায় ভুগছেন যে, কি করা যায়? কি করব?  অতি অবশ্যই তারা এই জিনিসটি ফলো করে নিজেরা নতুন করে যে কোন  ব্যবসা শুরু করতে পারেন। পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

স্টেশনারী ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে পারি?

স্টেশনারি ব্যবসার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল জায়গা। স্টেশনারি স্টলটি এমন একটি জায়গায় হতে হবে যেখানে মানুষের আনাগোনা খুব বেশি…….

স্টেশনারী ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা খরচ হতে পারে?

স্টেশনারী ব্যবসা শুরু করার জন্য কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতন আপনার খরচ হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি তা মাঝারি এবং বড় ধরনের করার চেষ্টা করেন তবে আপনাকে অতি অবশ্যই কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা মতন মুল্য বিনিয়োগ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *