ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস (7 Interview Tips In Bengali)
ইন্টারভিউ এর কথা শুনলে সবার কপালে ভাজ পড়ে যায়। আবার অন্যদিকে যদি কারো জীবনে প্রথমবার ইন্টারভিউয়ের ডাক আসে তাহলে তো আর কথাই নেই। সাধারণত ইন্টারভিউ এর সময় যে বিষয়টি প্রত্যেকের ভেতরে দেখা যায় সেটি হল নার্ভাসনেস। এমতাবস্থায় সাধারণ মানের প্রশ্ন ও পাহাড় সমান মনে হতে পারে। প্রথমবার ইন্টারভিউ দিতে গেলে সবাইকে এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তবে আপনি যদি পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ইন্টারভিউ দিতে যান তাহলে আপনি এই সমস্যা খুব সহজে এড়িয়ে যেতে পারবেন। এখানে আমরা আপনাকে এমন কিছু টিপস প্রদান করব যার দ্বারা আপনি আপনার যে কোন ইন্টারভিউতে খুব সহজে পাস করতে পারবেন।
আত্মবিশ্বাস বজায় রাখুন:
কথায় আছে “First Impression Is The Last Impression”। যেকোনো চাকরি পেতে শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং দক্ষতা আবশ্যক নয় সে সঙ্গে প্রয়োজন আপনার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস । যখনই আপনি কোন ইন্টারভিউ দিতে যাবেন তখনই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যান। আপনি কিভাবে হাঁটছেন, কিভাবে বসছেন, আপনার কথা বলার ধরন, পোশাক-আশাক সবকিছুই ইন্টারভিউ টিমকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে। কখনোই ইন্টারভিউ কক্ষে প্রবেশ করে আতঙ্কিত হবেন না এটা মনে রাখবেন যাঁরা ইন্টারভিউ নিচ্ছেন ওনারও আপনার মতে মানুষ। এটা ঠিক উনাদের দক্ষতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আপনাদের থেকে বেশি কিন্তু আপনাকেও আপনার জ্ঞান এবং আচরণ দিয়ে উনাদের প্রভাবিত করার আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে।
কোম্পানি সম্বন্ধে প্রয়োজনীয় তথ্য:
আপনি যে কোম্পানিতে ইন্টারভিউতে যাচ্ছেন সেই কোম্পানির সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করুন। আপনি যদি কোন প্রাইভেট কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে চান তাহলে ওই কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করে কোম্পানির সম্পর্কে সমস্ত তথ্য পেতে পারেন। এছাড়াও আপনার কোন পরিচিত ব্যক্তি আগে থেকে ওই কোম্পানিতে কাজ করে থাকলে আপনি উনার কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। যখনই আপনি কোম্পানির সম্বন্ধে উপযুক্ত তথ্য প্রদান করতে পারবেন তখন ইন্টারভিউয়াররাও মনে করবেন যে আপনি কাজের জন্য সত্যিই সিরিয়াস। এতে আপনার গ্রহণযোগ্যতা সুনিশ্চিত হতে পারে।
চিত্তাকর্ষক বায়োডাটা তৈরি করুন:
বেশিরভাগ কোম্পানিতে চাকরির শূন্য পদ অনুযায়ী বায়োডাটা সংক্ষিপ্তভাবে তালিকাভুক্ত করার পরেই প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। সবার প্রথমে আপনার বায়োডাটা খুব সুন্দর করে সাজিয়ে তুলুন। আপনার বায়োডাটাতে সবসময়ের জন্য সঠিক তথ্য প্রদান করুন। যদি বায়োডাটাতে ভুল তথ্য থাকে তাহলে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী প্রশ্ন উত্তর দেওয়াতে সমস্যা হতে পারে। আপনার বায়োডাটাতে আপনার ঠিকানা মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল নাম্বার দিতে একদম ভুল করবেন না।
নিজের সম্পর্কে বলার জন্য প্রস্তুতি নিন:
প্রায় সব ইন্টারভিউতে আপনার কাছ থেকে আপনার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হতে পারে তার জন্য আগে থেকেই আপনি প্রস্তুতি নিয়ে থাকুন। আপনি যে প্রশ্নের জন্য আবেদন করেছেন সেই পোস্ট সম্পর্কিত আপনার কোন অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা থাকলে সেটা উল্লেখ করুন। সেই পোস্ট সংক্রান্ত অন্য কোন কোম্পানিতে আগে কাজ করে থাকলেও বা কোন অভিজ্ঞতা থাকলে সেটি উনাদের সামনে বলুন।
নার্ভাসনেস থেকে দূরে থাকুন:
ইন্টারভিউ কক্ষে প্রবেশ করার আগে থেকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করুন। যেকোনো প্রশ্নের উত্তর আত্মবিশ্বাসের শহীদ কম শব্দে সঠিকভাবে বলার চেষ্টা করুন। আপনি যদি কোন প্রশ্নের উত্তর না জেনে থাকেন তার জন্য আবোল তাবোল না বলে সরাসরি ভাবে উনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হোন। এর ফলে আপনার আত্মবিশ্বাস পরীক্ষকের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
পরিবারের সঙ্গে ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি:
আপনার পরিবারের যে কোন সদস্যের সহযোগিতার মাধ্যমে ইন্টারভিউ এর প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। এর ফলে আপনি আপনার আত্মবিশ্বাসকে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করতে পারবেন। বাড়ির ভাই, বোন বা বাবা-মার কাছে ইন্টারভিউ এর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অভ্যাস করতে থাকুন। সম্ভাব্য সর্বোত্তম উপায়ে তাদের সামনে আপনার ব্যক্তিগত পরিচিতি দেওয়ার চেষ্টা করুন এর ফলে আপনার মনোবল অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে। যদি আপনার কাছে কেউ না থাকে তাহলে আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়েও ইন্টারভিউয়ের অনুশীলন করতে পারেন।
ইন্টারভিউ এর স্থানে যথাসময়ে পৌঁছান:
নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টা আগে ইন্টারভিউ এর ভেনুতে পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। এরপরে ধীরে ধীরে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করুন। যদি আপনি দেরি করে পৌছান তাহলে আপনার অসাবধানতা সামনে চলে আসবে যা আপনার আত্মবিশ্বাসকে এক নিমেষে নিচে নামিয়ে দিতে পারে।
এই ছিল কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারভিউ টিপস, আশারাখি এই নির্দেশ গুলো অনুসরণ করলে আপনি আপনার ইন্টারভিউতে সফলভাবে পারফরম্যান্স করতে পারবেন ধন্যবাদ।