যদিও কোন বড়ো কোম্পানির মত ব্রান্ড ভ্যালু থাকে না কিন্তু তবুও নিজস্ব ব্যবসার অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। জানলে হয়তো অবাক হবেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা মাসের শেষে ৪০,০০০/- থেকে ৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয় করেন। তাই আজকাল বেশিরভাগ মানুষ নিজস্ব ব্যবসার কথা ভাবেন কারণ এতে লাভের অংশ অনেকটাই বেশি থাকে। কারোর অধীনস্থ হয়ে কাজ করলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেবল বেতন বৃদ্ধি পায় তাও মাত্র কয়েক শতাংশ। কিন্তু যদি আপনি একটা ক্ষুদ্র ব্যবসা নিজস্ব পদ্ধতিতে গড়ে তুলেন তাহলে শুরুতে লাভের শতাংশ হয়তো কম হবে কিন্তু আগামী সময়ে সেই ব্যবসার মাধ্যমে আপনি অনেক লাভবান হতে পারবেন।
কোন ব্যবসা ছোট নয় যদি আপনি সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবসা করতে পারেন। আপনারা প্রত্যেকেই ধীরু ভাই আম্বানির কথা শুনেছেন। বর্তমান সময়ে এক দিকে বেড়ে চলেছে বেকারত্ব এবং আর অন্যদিকে মুদ্রাস্ফীতি। তাই একটা ব্যবসা শুরু করতে গেলে খুব ভালো অংকের পুঁজি বিনিয়োগ করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু আজকের এই নিবন্ধে আলোচনা করব কিভাবে আপনি মাত্র ১০০০/- টাকা বিনিয়োগ করে একটা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
চায়ের দোকান
আপনি যদি কম অর্থ বিনিয়োগ করে ভালো লাভ পেতে চান তাহলে চায়ের ব্যবসা আপনার জন্য খুবই উপযুক্ত। এই ব্যবসাটি আপনি যে কোন জায়গায় শুরু করতে পারবেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের চা খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। আজকাল এক কাপ চায়ের বাজার মূল্য ১০ টাকা যেখানে খরচ হয় মাত্র তিন থেকে পাঁচ টাকা।
একটি চায়ের স্টল খুলতে আপনার প্রয়োজন হবে একটি টেবিল, চা বানানোর পাত্র। যেকোনো বাজারে, রাস্তার পাশে, অফিসের বাইরে, পার্কে এমনকি পাড়ার মোড়েও চায় স্টল বসাতে পারেন। পরবর্তীতে ব্যবসা ভালো চললে আপনি বড় পরিসরে ব্যবসা চালু করতে পারেন।
সবজির ব্যবসা
প্রত্যেকেই তাজা সবজি খেতে খুব ভালোবাসে। তাই আপনি সবজি ব্যবসার মাধ্যমে প্রত্যেকদিন ইনকামের সুযোগ লাভ করতে পারেন। আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন যারা সবজি ব্যবসা করে তার প্রত্যেকদিন হাজার হাজার টাকা আয় করে। সব সময় চেষ্টা করুন তাজা এবং মরশুমের সবজি রাখার জন্য। ঠিক চা স্টলের মতন পাড়ার মোড়ে, রাস্তার পাশে যেকোনো জায়গায় আপনি ক্ষুদ্র পরিসরে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কেবলমাত্র ১০০০ টাকা খরচ করে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
জলের প্যাকেটের ব্যবসা
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে পানীয় জলের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেই সঙ্গে পরিশোধিত পানীয় জলের চাহিদা ও খুব দ্রুত হারে বাড়ছে। আর এমন পরিস্থিতিতে জলের পাউচ এর ব্যবসা ও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কারণ প্লাস্টিকের বোতলের তুলনায় কম দামে এই পাউচ বাজার পাওয়া যায়। বাজারে ৩ টাকা থেকে ৫ টাকার ভিতরে জলের পাউচ পাওয়া যায় যেখানে খরচা হয় মাত্র ৫০ পয়সা থেকে এক টাকা। মাত্র ১ হাজার টাকা লাগিয়ে অনায়াসে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এই ব্যবসা করে অনেকে দ্বিগুণ অর্থ লাভ করেছেন আশা করি আপনিও পারবেন।
কটন ক্যান্ডি বা বুড়িমার চুল
আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি কটন ক্যান্ডি খেয়েছি। অনেকে আমরা এই কটন ক্যান্ডিকে বুড়িমার চুল হিসেবেও জানি। বিশেষত ছোট ছোট বাচ্চারা এই ক্যান্ডি খেতে খুব ভালোবাসে। আপনি চাইলে ১০০০ টাকা থেকে 5000 টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসায় আপনার প্রয়োজন একটি কটন ক্যান্ডি তৈরি করার মেশিন যেটা অনেক কম দামে পাওয়া যায়, একটা ছোট গ্যাস, চিনির, ফুড কালার ইত্যাদি। এক প্যাকেট কটন ক্যান্ডি তৈরি করতে আপনার খরচ হবে ১ থেকে ২ টাকা আর সেখানে আপনি এক একটা প্যাকেট ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
বেলুনের ব্যবসা
কেবলমাত্র ১ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে আপনি আজও শুরু করতে পারেন বেলুনের ব্যবসা। পাড়ার মোড়ে, মেলায় ,পার্কে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ছোট বাচ্চারা বেলুন দেখা মাত্রই বেলুন নেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করে। এক একটা বেলুন আপনি ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন যেখানে আপনার একটা বেলুন কিনতে খরচ হবে এক থেকে দুই টাকা।
বর্তমান সময়ে গ্যাস বেলুনের চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেরকম হলে আপনি একটা গ্যাসের ট্যাংক কিনতে পারেন। সেটা আপনার সাইকেলে রেখে এবং বেলুনে গ্যাস ভরে বিক্রি করতে পারেন। এতে যেরকম আপনার বিক্রয়ও বাড়বে সেসঙ্গে আপনার লাভের পরিমাণও বর্ধিত হবে কেননা গ্যাস বেলুনের দাম বায়ু বেলুনের থেকে বেশি।
যদি আপনি বেকার হন বা চাকরি করতে না চান তাহলে উপরে আলোচিত যে কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আলোচিত ব্যবসা গুলিতে যেরকম বিনিয়োগের পরিমাণ খুবই কম ঠিক একই রকম ক্ষতিও একদম নগণ্য। তাই আজ থেকে যে কোনো একটি ব্যবসা শুরু করার চিন্তাভাবনা করতে পারেন।